• Breaking News

    Friday, February 10, 2017

    এইচআইভি এইডস

    এইচআইভি এইডস সম্পর্কে জানুন সচেতন থাকুন-Bangla Health Tips 


    এইচআইভি / এইডস কনটেন্টটিতে এইডস কি, রোগের লক্ষণ, কিভাবে ছড়ায়, কিভাবে ছড়ায় না, কখন ডাক্তার দেখাতে হবে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, চিকিৎসা, প্রতিকার, প্রতিরোধ সর্ম্পকে বর্ণনা করা হয়েছে। এইচআইভি বা এইডস হলো জীবনহানিকর একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। এখন পর্যন্ত এইচআইভি/এইডসের কোন কার্যকর চিকিৎসা আবিস্কার হয়নি। এইডসের সংক্রমণ প্রতিরোধ সবচেয়ে ভালো উপায় হলো এর প্রতিরোধ, চিকিৎসা এবং এইডস সম্পর্কে পড়াশুনা ও সচেতনতা।

    এইডস কি

    ইডস একটি সংক্রামক রোগ যা এইচআইভি  (human immunodeficiency virus) ভাইরাসের সংক্রমণের মাধ্যমে হয়। এটি মানুষের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। এইচআইভি সংক্রমণের ফলে অন্যান্য রোগ যেমন-নিউমোনিয়া, মেনিননজাইটিস এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে। এইচআইভি সংক্রমণের পরের ধাপকেই এইডস (Acquired Immunodeficiency Syndrome) বলা হয়।

    এইডস হয়েছে কি করে বুঝছেন 

    সংক্রমণের ধাপের উপর নির্ভর করে এইচআইভি ও এইডসের লক্ষণ ও উপসর্গগুলো পৃথক হয়ে থাকে।

    এইডস এর লক্ষণ ও উপসর্গ 

    সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণত: 
    • জ্বর
    • মাথা ব্যথা
    • গলা ভাঙ্গা
    • লসিকাগ্রন্থি ফুলে উঠা (Swollen lymph glands)
    • শরীরে লালচে দানা (Rash) ইত্যাদি লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয়।
    সংক্রমণের পরবর্তী সময় সাধারণত: 
    • অস্থিসন্ধি ফুলে উঠা (Swollen lymph nodes)
    • ডায়রিয়া
    • শরীরের ওজন কমা
    • জ্বর 
    • কাশি এবং শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয়।
    সংক্রমণের শেষ পর্যায়ে সাধারণত: 
    • রাতের বেলা খুব ঘাম হওয়া
    • কয়েক সপ্তাহ ধরে ১০০ ফারেনহাইট (৩৮ সে.) বা এর অধিক তাপমাত্রার জ্বর অথবা কাঁপুনি
    • শুকনা কাশি এবং শেষ কষ্ট
    • দীর্ঘদিন ধরে ডায়রিয়া
    • মুখ অথবা জিহ্বা বেঁকে যাওয়া অথবা সাদা দাগ পড়া
    • মাথা বেথা 
    • সবকিছু অস্পষ্ট ও বিকৃত দেখা
    • তীব্র অবসাদ অনুভব
    • তিন মাসের অধিক সময় ধরে অস্থিসন্ধি ফুলে থাকা ইত্যাদি লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয়।
    শিশুদের ক্ষেত্রে এইচআইভি’র লক্ষণ 
    • ওজন বৃদ্ধি না পাওয়া
    • স্বাভাবিক বৃদ্ধি না হওয়া
    • হাঁটতে সমস্যা
    • মানসিক বৃদ্ধি দেরীতে হওয়া
    • কানের সংক্রমণ, নিউমোনিয়া এবং টনসিলের মতো সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যার প্রকট আকার ধারণ করা
    কিভাবে এইডস ছড়ায় 
    • শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে
    • এইচআইভি সংক্রমিত রক্ত আদান-প্রদানের মাধ্যমে
    • কারো ব্যবহৃত সুচ এবং সিরিঞ্জ ব্যবহারে মাধ্যমে
    • সিরিঞ্জ এর মাধ্যমে দুর্ঘটনা জনিত কারণে
    • গর্ভবতী মা এইচআইভিতে আক্রান্ত হলে, ডেলিভারীর সময় এবং আক্রান্ত মায়ের দুধ পান করলে শিশুর এই রোগ হতে পারে।
    • শরীরের কোন অঙ্গ বা কলা প্রতিস্থাপন করলে অথবা জীবাণুমুক্ত করা হয়নি এমন সরঞ্জাম দিয়ে দাঁতের চিকিৎসা বা অপারেশন করলে।
    কি করলে এইডস ছড়ায় না 
    • আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে খাওয়া দাওয়া করলে
    • আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত পায়খান (Toilet) ব্যবহার করলে
    • আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে হাত মিলালে
    • আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে খেলাধূলা, কোলাকুলি করলে
    • এই থালায় ভাত খেলে
    কখন ডাক্তার দেখাবেন
    রোগের প্রাথমিক ও পরবর্তী পর্যায়ের লক্ষণ ও উপসর্গগুলো দেখা দেয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
    কোথায় চিকিৎসা করাবেন 
    • মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
    • সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল
    • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
    • বেসরকারী হাসপাতাল
    • এনজিও পরিচালিত বিশেষায়িত স্বাস্থ্যকেন্দ্র
    কি ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে  
    • রক্তের পরীক্ষা (ELISA and Western blot tests)
    • মুখের শ্লেষ্মা পরীক্ষা (Oral Mucus)
    কি ধরণের চিকিৎসা আছে 
    ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন এবং অন্যান্য নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
    এইচআইভি/ এইডস আক্রান্ত হলে জীবন-যাপন পদ্ধতি
    • শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন না করা
    • গর্ভধারণ না করা
    • বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে দেখানো
    • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন ও নির্দেশনা মেনে চলা
    • প্রতিষেধক গ্রহণ
    • সুষম খাদ্য যেমন-তাজা শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি খাওয়া
    • যেসব খাবার খেলে সংক্রমণ হতে পারে যেমন-কাঁচা খাবার সেগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকা
    • বিশুদ্ধ পানি পান করা
    • নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা
    • পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম
    • ধূমপান ও মদপান থেকে বিরত থাকা   
    • হাত ভালোমত পরিষ্কার করা
    এইডস কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়
    • নিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন
    • এইচআইভি আক্রান্ত কারো সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা থেকে বিরত থাকা
    • অপরিষ্কার এবং কারো ব্যবহৃত সুচ ব্যবহার না করা
    • কারো থেকে রক্ত গ্রহণ করতে হলে সেটা এইচআইভি সংক্রমিত কিনা পরীক্ষা করে দেখা
    • নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করা
    • এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্লেড এবং টুথব্রাশ ব্যবহার না করা
    • গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে সঠিক যত্ন নেয়া
    • সতর্কতার সাথে নিজের শারীরিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তার প্রতি খেয়াল রাখা
    সচরাচর জিজ্ঞাসা 
    প্রশ্ন. ১ . এইডস কেন হয় ? 
    উত্তর.  বিশেষ এক ধরণের জীবাণু এইচআইভি (Human Immunodeficiency Virus) দ্বারা সংক্রমণের মাধ্যমে এইডস হয়।
    প্রশ্ন. ২. কাদের এইডস হবার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে ? 
    উত্তর. যাদের এইডস হবার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে তারা হলেন :
    • যারা একের অধিক সঙ্গীর সাথে অনিরপদ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন
    • যাদের এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক রয়েছে
    • সিফিলিস (Syphilis), হার্পিস (Herpes), ক্ল্যামাইরিয়া ( Chlamydia), গনোরিয়া (Gonorrhea) অথবা Bacterial vaginosis এর মত যৌনবাহিত রোগ ( Sexually Transmitted Disease) হলে
    • অন্যের ব্যবহৃত সুচ ও সিরিঞ্জ ব্যবহার করলে
    • এইচআইভি আক্রান্ত মায়েদের গর্ভ থেকে জন্ম নেয়া শিশু
    প্রশ্ন .৩. এইডস হলে কি ধরণের জটিলতা দেখা দিতে পারে ? 
    উত্তর. এইডস হলে নিচের জটিলতাগুলো দেখা দিতে পারে :
      ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সংক্রমণ 
    • ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়া (Bacterial Pneumonia)
    • মাইকোব্যাকটেরিয়াম এভিয়াম কমপ্লেক্স বা ম্যাক (Mycobacterium Avium complex) সংক্রমণ
    • যক্ষা 
    • সালমোনেললোসিস (Salmonellosis)
    • ব্যাসিলারী এনজিওম্যাটোসিস (Bacillary angiomatosis)
      ভাইরাস ঘটিত সংক্রমণ 
    • সাইটোমেগালো ভাইরাস (Cytomegalovirus)
    • ভাইরাল হেপাটাইটিস (Viral hepatitis)
    • হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস (Herpes simplex virus)
    • হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (Human papillomavirus)
    • প্রোগ্রেসিভ মালটিফোকাল লিউকোএনসিফ্যালোপ্যাথি (Progressive Multifocal Leukoencephalopathy (PML)
    ছত্রাকজনিত সংক্রমণ 
    • ক্যানডিডিয়াসিস (Candidiasis)
    • ক্রিপটোকক্কাল মেনিনজাইটিস  (Cryptococcal meningitis)
    জীবাণু সংক্রমণ 
    • নিউমোসিসটিস কারিনি নিউমোনিয়া (Pneumocystis carnii Pneumonia (PCP))
    • টক্সোপ্লাজমোসিস (Toxoplasmosis)
    • ক্রিপটোস্পোরিডিওসিস (Cryptos poridiosis)
    ক্যান্সার সংক্রান্ত জটিলতা 
    • কাপোসিস সারকোমা (Kaposi’s Sarcoma)
    • নন-হডকিনস লিম্ফোমা (Non-Hodgkin’s Lymphoma)
    অন্যান্য জটিলতা 
    • শরীরের ওজন কমে যাওয়া এবং ডায়রিয়া,দীর্ঘস্থায়ী দুর্বলতা এবং জ্বর(Wasting syndrome)
    • স্নায়ুগত জটিলতা (Neurological Complications)
    • মৃত্যূ বরণ

    No comments:

    Post a Comment