• Breaking News

    Tuesday, February 14, 2017

    ৩৫ + ত্বকের যত্ন

    ৩৫ + ত্বকের যত্ন



    কেমন করে বুঝবেন আপনার ত্বকের ধরন? তার আগে জানা দরকার বয়সটাও। আমাদের দেশে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ৩০ বছরের পর নারী আর নিজের ত্বকের প্রতি যত্নবান থাকে না। সংসার, সন্তান, উপরন্তু কর্মজীবী নারীর আছে কাজেরও ঝক্কি। সব সামলে নিজের দিকে নজর দেওয়ার সময় কোথায় তার? অথচ রূপবিশেষজ্ঞ নাহিন মনে করেন, এ বয়সেই নারীর ত্বক চায় আলাদা যত্ন।
    ঘুম থেকে উঠেই মুখ ধোয়ার আগে টিস্যু পেপার দিয়ে মুখ মুছে নেওয়ার পর যদি তা চিপচিপে হয়ে যায়, বুঝতে হবে ত্বক তৈলাক্ত। তৈলাক্ত ত্বকে বলিরেখা কম পড়ে। অন্যদিকে শুষ্ক ত্বক অনুজ্জ্বল ও ম্যাড়ম্যাড়ে হয়। টানটান হয়ে থাকে সব সময়। এ ধরনের ত্বক ফাটে বেশি এবং বলিরেখা বা মেছতার মতো সমস্যাও এ ধরনের ত্বকে দেখা দেয় বেশি। মাঝ বয়সের নারীর শুষ্ক ত্বকের প্রতি আলাদা খেয়াল রাখা প্রয়োজন। বিশেষ করে শীতের এই শেষ সময়ে বেশি করে যত্নবান হতে হবে। কর্মজীবী নারীদেরও উচিত সপ্তাহে অন্তত তিন দিন আধাঘণ্টা করে সময় নিজের ত্বককে দেওয়া।
    বয়স অনুযায়ীও খেয়াল রাখতে পারেন নিজের ত্বকের।
    ত্রিশোর্ধ্ব নারীর ত্বকের জন্য
    ক্লিনজিং, টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিংয়ের অভ্যাস নিয়মিত থাকতে হবে। সপ্তাহে একবার স্ক্র্যাব ব্যবহার করা উচিত। তাতে ত্বকের মরাভাব উঠে গিয়ে ত্বক তাজা হয়ে ওঠে। যেকোনো ভালো ব্রান্ডের স্ক্যাব ব্যবহার করা যেতে পারে। সপ্তাহে দুবার প্যাক লাগানো উচিত। ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে সারা মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এই প্যাক খুবই কার্যকর। এতে মুখের ত্বকের শিথিলতা দূর হয়।
    শুষ্ক ত্বকের জন্য দুই চা চামচ মুগডালের সঙ্গে দুই চা চামচ ময়দা, দুই চা চামচ অ্যালমন্ড তেল আর সঙ্গে খানিকটা গোলাপজল মিশিয়ে স্ক্র্যাব তৈরি করে মুখে লাগাতে হবে। আসলে স্ক্র্যাবগুলোর মধ্যে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা একটু খড়খড়ে ধরনের হয়। এখানে মুগডাল এ কাজটি করছে। এর ফলে মুখের মরা কোষ পরিষ্কার হয়ে যায়। ১০ মিনিট এই প্যাকটি রেখে আলতো করে ঘষে তুলে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। এতে শিথিল হয়ে যাওয়া ত্বক পাবে টানটান ভাব।
    ফল ও সবজির রস অনেক সময় ত্বক থেকে মৃত কোষ তুলে দেয়। পেঁপে, শসা, কমলার খোসা, আপেল, তরমুজ, আলু ইত্যাদি ভেষজ স্ক্যাবার হিসেবে খুব ভালো। এমনকি নারকেল বা গাজর কোরা আলতো করে ঘষে মুখে লাগালেও ভালো স্ক্র্যাবারের কাজ করে।
    চল্লিশোর্ধ্ব নারীরা খেয়াল করুন
    এ সময়টাতে নারীর শারীরিক নানা পরিবর্তনের জন্য ত্বকের প্রতি হতে হয় বিশেষ সংবেদনশীল। এস্ট্রোজেন নামক এক ধরনের হরমোনের অভাবে ত্বক তার স্বাভাবিক লাবণ্য হারায়। ফলে শুষ্কতা, বলিরেখা এবং পিগমেন্টেশন দেখা দেয়। অন্য যেকোনো ধরনের ত্বকের চেয়ে তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা এ সময় কম হয়। স্বাভাবিক ত্বক হয়ে পড়ে শুষ্ক। আর শুষ্কতার দরুন শুষ্ক ত্বকে আরও সমস্যা হয়। ত্বকে বয়সের ছাপ এড়াতে নিয়মিত ব্যায়াম, খাওয়া-দাওয়া এবং রূপ রুটিনের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের যত্নে প্যাক ও স্ক্র্যাব ব্যবহার করা উচিত। তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে এ বয়সটা স্বাভাবিক আচরণ করে। এ ধরনের ত্বকে আধাকাপ আপেল কুচির সঙ্গে একটি ডিমের সাদা অংশ এবং লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে ১৫ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। পাকা পেঁপে চটকে নিয়ে লেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়েও ত্বকে লাগানো যেতে পারে। এতে ত্বক নরম ও উজ্জ্বল হবে।
    শুষ্ক ত্বকে পাকা পেঁপের ক্বাথের সঙ্গে মধুর মিশ্রণ উপকার দেবে। এ ধরনের ত্বক কোমল রাখতে এক কাপ দুধ ফুটিয়ে তাতে অর্ধেক পাতিলেবুর রস এবং এক চা চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে লাগানো ভালো। আধাঘণ্টা ত্বকে রাখলে ত্বক সজীব ও মসৃণ হবে।
    পেশাগত কারণে যেসব নারীর দিনের অনেকটা সময় কাটে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে, তাঁরা সারা দিন নিয়মিত বিরতিতে পানি পান করুন। ফলের রস, চা বা কফিও খেতে পারেন। বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ময়েশ্চারাইজার লাগান। ব্যাগেও ময়েশ্চাইরাইজার রাখুন সব সময়। এতে শুষ্কতা ফাঁদ পাততে পারবে না আপনার ত্বকে।
    মেছতা না বলিরেখা থেকে মুক্তিসাধারণত ত্রিশের পর থেকেই ত্বকে মেছতা বা বলিরেখা দেখা দেয়। মেছতার জন্য এক চামচ সাদা জিরাগুঁড়ার সঙ্গে এক চামচ হলুদগুঁড়া, এক চামচ সরষেগুঁড়া ও এক চামচ আটা মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মেছতার ওপর লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
    বলিরেখা দেখা দিলে অ্যালমন্ড তেলের সঙ্গে মেথিবাটা পেস্ট করে মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলতে হবে।
    এ ছাড়া ত্বক ভালো রাখতে সকালের খোলা বাতাস ভীষণ উপকারী। ঘুম খুব ভালো হতে হবে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে। রাতে মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে উষ্ণ পানি উপকারী। দিনে ন্যূনতম ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। টাটকা শাকসবজি, ফল, সালাদ, প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। ভাজাভুজি, মিষ্টি এ বয়সে যথাসম্ভব এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়।
    সূত্রঃ প্রথম আলো।

    No comments:

    Post a Comment